পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এই পরিবর্তন স্পষ্ট চোখে পড়ে। এজন্য ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত লঞ্চ চালু করা হবে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
নৌপথের যাত্রার চ্যালেঞ্জগুলো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভ্রমণের সময় দীর্ঘ হওয়ায় লঞ্চ মালিকদের পরিচালন ব্যয়ও বেশি হয়। এর ফলে ভ্রমণকারীরা নৌপথে যাত্রা বাতিল করে বিকল্প পথে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপথ যাত্রী পরিবহন সমিতির (বিআইডব্লিউপিসিএ) সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে।’
আরও পড়ুন: বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৭টায়
উপরন্তু সদরঘাট টার্মিনালের দিকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণেও যাত্রীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এর কারণেও নৌপথে যাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন মাত্র ৫০-৫৫টি লঞ্চ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এগুলোতে আগের সময়ের চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।
বাদল জোর দিয়ে বলেন, যাত্রী না বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে ঈদের ছুটির ভিড় দেখা গেলে পরিষেবা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
অতীতে ঈদের মৌসুমে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যা্ত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এ বছর দৃশ্যপট আমূল বদলে গেছে, যাত্রী সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মন্দা সত্ত্বেও, যাত্রীদের সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে, ভাড়া বাড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের নৌপথের ওপর নির্ভরশীলতার কথা তুলে ধরে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া বলেন, বরিশাল ও চাঁদপুর থেকে যাত্রী কমে গেছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে উল্লেখ করেছেন, সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে লঞ্চ ভ্রমণ অনেকেরই পছন্দের। তবে বিভিন্ন কারণে গত আঠারো মাসে এর পৃষ্ঠপোষকতা ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আশীষ দে বলেন, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এবারের ঈদে আনুমানিক ২৫ লাখ মানুষ লঞ্চে ঢাকা ছাড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির জানান, সদরঘাটে ঈদের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটি যত ঘনিয়ে আসছে যাত্রী সংখ্যা ততই বাড়তে পারে বলে আশাবাদী তিনি।
আরও পড়ুন: ঈদে পর্যটন খাতে মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের